রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট কবিতা

৪। বিচিত্র সাধ

-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমি যখন পাঠশালাতে যাই

আমাদের এই বাড়ির গলি দিয়ে,
দশটা বেলায় রোজ দেখতে পাই

ফেরি-ওলা যাচ্ছে ফেরি নিয়ে ।
“চুড়ি চ1–ই চুড়ি চাই” সে হ্থাকে,
চীনের পুতুল ঝুড়িতে তার থাকে,
যায় সে চলে যে-পথে তার খুশি,

যখন খুশি খায় সে বাড়ি গিয়ে ।
দশট] বাজে সাড়ে দশট। বাজে

নাইকে। তাড়া হয় বা পাছে দেরি ॥
ইচ্ছে করে সেলেট ফেলে দিয়ে

অমনি করে বেড়াই নিয়ে ফেরি।

আমি যখন হাতে মেখে কালী
ঘরে ফিরি- সাডে চারটে বাজে ;
কোদাল নিয়ে মাটি কোপায় মালী
বাবুদের এ ফুল-বাগানের মাঝে ।
কেউ তো! তারে মানা নাহি করে
কোদাল পাছে পড়ে পায়ের পরে,
গায়ে মাথায় লাগছে কত ধুলো
কেউ তে! এসে বকে না তার কাজে।

মা তারে তো পরায় না সাফ জাম!
ধুয়ে দিতে চায় না ধুলোবালি,
ইচ্ছে করে আমি হতেম যদি
বাবুদের এ ফুল-বাগানের মালী।

একটু বেশি রাত না হোতে হোতে

মা আমাদের ঘুমপাড়াতে চায় ।
জানল! দিয়ে দেখি চেয়ে পথে

পাগড়ি পরে পাহারা-ওল। যায়।
আধার গলি, লোক বেশি ন’ চলে,

,গ্যাসের আলে মিটমিটিয়ে জ্বলে,

লগ্নটি ঝুলিয়ে নিয়ে হাতে

দাড়িয়ে থাকে বাড়ির দরজায়।
রাত হয়ে যায় দশটা এগারোটা

কেউ তো কিছু বলে না! তার লাগি।
ইচ্ছে করে পাহারা-ওল। হয়ে

গলির ধারে আপন মনে জাগি ॥


Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *