রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট কবিতা

৩৯। লুকোচুরি

-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমি যদি ছুষ্টমি ক’রে
টাপার গাছে চাপা হয়ে ফুটি,
ভোরের বেল মা গো, ডালের পরে
কি পাতায় করি লুটোপুটি ।
তবে তুমি আমার কাছে হারে,
তখন কি মা, চিনতে আমায় পারো ।
তুমি ডাকো “খোকা কোথায় ওরে 1”
আমি শুধু হাসি চুপটি ক’রে।
তখন তুমি থাকবে যে-কাজ নিয়ে
সবই আমি দেখব নয়ন মেলে ।
স্নানটি ক’রে চাপার তলা দিয়ে
আসবে তুমি পিঠেতে চুল ফেলে 7৮

এখান দিয়ে পুজার ঘরে যাবে,

দূরের থেকে ফুলের গন্ধ পাবে +
তখন তুমি বুঝতে পারবে ন। সে
তোমার খোকার গায়ের গন্ধ আসে),

দুপুরবেলা মহাভারত-হাতে
বসবে তুমি সবার খাওয়া হোলে
গাছের ছায়া ঘরের জানালাতে
পড়াবে এসে তোমার পিঠে কোলে
আমি আমার ছোট্র ছায়াখানি
দোলাব তোর বইয়ের পরে আনি”
তখন তুমি বুঝতে পারবে না সে
তোমার চোখে খোকার ছায়া ভাসে ॥

সন্ধ্যেবেলায় প্রদীপখানি জ্বেলে
যখন তুমি যাবে গোয়াল ঘরে,
তখন আমি ফুলের খেল। খেলে
টুপ ক’রে মা, পড়ব ভূঁয়ে ঝরে।
আবার আমি তোমার খোকা হব,
“গল্প বলো” তোমায় গিয়ে কব।
তুমি বলবে “ছুষ্টং ছিলি কোথা”।
আমি বলব, “বলব ন। সে-কথা। ॥”


Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *