রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট কবিতা

৩৫। বনবাস

-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বাবা যদি রামের মতো

পাঠায় আমায় বনে
যেতে আমি পারিনে কি
তুমি ভাবছ মনে ।

চোদ্দ বছর ক-দিনে হয়

জানিনে মা ঠিক,
দণ্ডক বন আছে কোথায়

এঁ মাঠে কোন্‌ দিক।
কিন্তু আমি পারি যেতে

ভয় করিনে তাতে

লক্ষণ ভাই যদি আমার
থাকত সাথে সাথে

বনের মধ্যে গাছের ছায়ায়
বেঁধে নিতেম ঘর,
সামনে দিয়ে বইত নদী
পড়ত বালির চর।
ছোটে একটি থাকত ভিডি
পারে ষেতেম বেয়ে
হরিণ চ*রে বেড়ায় সেথা,
কাছে আসত ধেয়ে।
গাছের পাতা খাইয়ে দিতাম
আমি নিজের হাতে,
লক্ষ্মণ ভাই যদি আমার
থাকত সাথে সাথে ।

স্কত যে গাছ ছেয়ে থাকত
কত রকম ফুলে,
মাল গেঁথে পরে নিতেম
জড়িয়ে মাথার চুলে ।
নানা রঙের ফলগুলি সব
ভ্ড য়ে পড়ত পেকে,
ঝুরি ভরে ভ’রে এনে
ঘরে দিতেম রেখে;
খিদে পেলে ছুই ভায়েতে
খেতেম পদন্সপাতে,
লক্ষ্পণ ভাই যদি আমার
থাকত সাথে সাথে ।

রোদের বেলায় অশথ তলায়
ঘাসের ‘পরে আনি”
রাখাল-ছেলের মতো। কেবল

বাজাই বসে বাশি ।
ডালের ‘পরে ময়ূর থাকে

পেখম পড়ে ঝুলে,
কাঠবিড়ালী ছুটে বেড়ায়

ম্যাজ টি পিঠে তুলে ।

কখন্‌ আমি ঘুমিয়ে যেতেম
দুপুর বেলার তাতে-__

লক্ষ্মণ ভাই যদ্দি আমার
থাকত সাথে সাথে ।

সন্ধ্যেবেলায় কুড়িয়ে আনি
শুকনো ডালপালা,
বনের ধারে বসে থাকি
আগুন হোলে জ্বাল। ।
পাখিরা সব বাসায় ফেরে,
দূরে শেয়াল ডাকে,
সন্ধ্যে-তার! দেখা-ঘৈ যায়
ডালের ফাকে ফাকে
মায়ের কথা মনে করি
বসে আধার রাতে,__
লক্ষ্মণ ভাই যদি আমার
থাকত সাথে সাথে ।1,.

ঠাকুরদাদার মতো বনে
আছেন ঝবি মুনি,

তাদের পায়ে প্রণাম ক’রে
গল্প অনেক শুনি। :

রাক্ষসেরে ভয় করিনে
আছে গুহক মিতা,
রাবণ আমার কী করবে মা,
নেই তে! আমার সীতা
হন্থুমানকে যত্ব ক’রে
খাওয়াই ছুধে-ভাতে,
লক্ষ্মণ ভাই যদি আমার
থাকত সাথে সাথে

_ মা গো, আমায় দে না কেন
একটি ছোটো ভাই-__
দুইজনেতে মিলে আমরা
বনে চলে যাই ।
আমাকে মা, শিখিয়ে দিবি
রাম-যাত্রার গান,
মাথায় বেঁধে দিবি চূড়ো,
হাতে ধনুকবাণ ।
চিত্রকুটের পাহাড়ে যাই
এমনি বরষাতে,
‘লক্্পণ ভাই যদি আমার .
থাকত সাথে সাথে,


Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *