৩৪। ছুটির দিনে
এ দেখো মা, আকাশ ছেয়ে
মিলিয়ে এল আলো;
আজকে আমার ছুটোছুটি
লাগল না আর ভালো ।
ঘণ্টা বেজে.গেল কখন্
_ অনেক হোলো বেলা,
তোমায় মনে পড়ে গেল
ফেলে এলেম খেলা ।.
আজকে আমার ছুটি, আমার
শনিবারের ছুটি
কাজ যা.আছে সব রেখে আয়
মা, তোর পায়ে লুটি ॥
দ্বারের কাছে এই খানে বোস্
এই হেথা চৌকাঠ ;
বল্ সামারে কোথায় আছে
তেপান্তরের মাঠ
এ দেখো মা, বর্ষ এল
ঘনঘটায় ঘিরে
বিজুলি ধায় একে বেঁকে
আকাশ চিরে চিরে ।
দেবতা যখন ডেকে ওঠে
থর্থরিয়ে কেপে
ভয় করতেই ভালবাসি
তোমায় বুকে চেপে।
ঝুপঝুপিয়ে বুষ্টি যখন
বাশের বনে পড়ে
কথ। শুনতে ভালবাসি
বসে কোণের ঘরে ।
এ দেখো মা, জান্ল। দিয়ে
আসে জলের ছাট,
বল্ গে! আমায় কোথায়’ আছে
তেপাস্তরের মাঠ।
কোন্ সাগরের তীরে মা গে৷
কোন্ পাহাড়ের পারে,
কোন্ রাজাদের দেশে মা গে
কোন্ নদীটির ধারে ।
কোনোখানে আল বাধা তার
নাই ডাইনে বায়ে
পথ দিয়ে তার সন্ধ্যে বেলায়
পৌঁছে না কেউ গায়ে?
সারাদিন কি ধুধু করে
শুকৃনো ঘাসের জমি ।
একট। গাছে থাকে শুধু
ব্যাঙ্গমা-বেঙ্গমি ?
সেখান দিয়ে কাঠকুড়,নি
যায়না নিয়ে কাঠ?
বল্ গে! আমায় কোথায় আছে
তেপাস্তরের মাঠ ।
এমনিতরেো। মেঘ করেছে
সারা আকাশ ব্যেপে,
রাজপুত্তর যাচ্ছে মাঠে
একুল। ঘোড়ায় চেপে ।
গজমোতির মালাটি তার
বুকের পরে নাচে,
রাজকন্তা কোথায় আছে
খোজ পেলে কার কাছে ।
মেঘে যখন ঝিলিক মারে
আকাশের এই কোণে,
ছয়োরানী-মায়ের কথা |
পড়ে না তার মনে ?
ছুখিনী মা গোয়াল ঘরে
দিচ্ছে এখন ঝট,
রাজপুত্তর চলে-যে কোন্
তেপাস্তরের মাঠ ।
এ দেখ, মা গায়ের পথে
রোদ নাইকো মোটে ;
রাখাল-ছেলে সকাল ক’রে
ফিরেছে আজ গোঠে।
আজকে দেখো রাত হয়েছে
দিন না যেতে যেতে,
কৃষাণেরা বসে আছে
দাওয়ায় মাছর পেতে ।
আজকে আমি নুকিয়েছি মা,
পুথি-পত্তর যত,__
পড়ার কথা আজ বোলো না।
যখন বাবার মতো
বড়ে। হব, তখন আমি
পড়ব প্রথম পাঠ,_-
আজ বলো মা, কোথায় আছে
তেপান্তরের মাঠ।
