৩২। মাঝি
আমার যেতে ইচ্ছে করে
নদীটির এ পারে-_
যেথায় ধারে ধারে
বাশের খোটায় ডিডি নৌকো?
বাধা সারে সারে।
কৃষাণেরা পার হয়ে যায়
লাঙল কাধে ফেলে;
জাল টেনে নেয় জেলে:
গোরু মহিষ সাতরে নিয়ে
যায় রাখালের ছেলে ।
সন্ধ্যে হোলে সেখান থেকে
সবাই ফেরে ঘরে;
শুধু রাতছুপরে
শেয়ালগুলো। ডেকে উঠে
ঝাউ-ডাঙাটার পরে ॥
মা, যদি হও রাজি
বড়ো হোলে আমি হব
খেয়াঘাটের মাঝি ।
শুনেছি ওর ভিতর দিকে
আছে জলার মতো ।
বরা হোলে গত
ঝাকে ঝাকে আসে সেথায়
চখাচখী যত ।
তারি ধারে ঘন হয়ে
জন্মেছে সব শর;
মানিকজোড়ের ঘর,
কাদাখোচ। পায়ের চিহু
আকে পাকের পর।
সন্ধ্যা হোলে কত দিন মা,
দাড়িয়ে ছাদের কোণে
দেখেছি এক মনে-_
চাঁদের আলো লুটিয়ে পড়ে
সাদা কাশের বনে।
মা, যদি হও রাজি
বড়ো হোলে আমি হব
. খেয়াঘাটের মাঝি ।
এ-পার ও-পার ছুই পাঁরেতেই
যাব নৌকো বেয়ে ।
যত ছেলে মেয়ে
স্লানের ঘাটে থেকে আমায়
দেখবে চেয়ে চেয়ে ।
সুর্য যখন উঠবে মাথায়
অনেক বেলা হোলে-_
আসব তখন চলে
“বড়ে। খিদে পেয়েছে গে!
খেতে দাও মা”, ঝলে।
আবার আমি আসব ফিরে,
আধার হোলে সাঝে
তোমার ঘরের মাঝে ।
বাবার মতো যাব না ম।
বিদেশে কোন্ কাজে ।
মা, যদি হও রাজি
বড়ো হোলে আমি হব
খেয়াঘাটের মাঝি ॥
