৩০। উপহার
স্পেহ-উপহার এনে দিতে চাই,
কী-যে দিব তাই ভাবনা,
যত দিতে সাধ করি মনে মনে
খুঁজে পেতে সে তো পাব না
আমার যা ছিল, ফাকি দিয়ে নিতে
সবাই করেছে একতা,
বাকি-যে এখন আছে কত ধন
না তোলাই ভালে! সে-কথ। |
সোন। রূপো আর হীরে জহরৎ
পোত। ছিল সব মাটিতে,
জহরী যে যত সন্ধান পেয়ে
নে-গেছে যে যার বাটিতে
টাকাকড়ি মেল! আছে টাকশালে
নিতে গেলে পড়ি বিপদে ।
বসন ভূষণ আছো সন্ধুকে,
পাহারাও আছে ফি পদে ॥
এ যে-সংসারে আছি মোরা সবে
এ বড়ো বিবম দেশ রে ।
ফাকিফুকি দিয়ে দুরে চলে গিয়ে
ভুলে গিয়ে সব শেষ রে।
ভয়ে ভয়ে তাই স্মরণ-চিহন
যে যাহারে পারে দেয় ষে।
তাও কত থাকে কত ভেডে যায়
কত মিছে হয় ব্যয় যে॥
স্নেহ যদি কাছে রেখে যাওয়া যেত,
চোখে যদি দেখা যেত রে,
কতগুলো তবে জিনিসপত্র
বল্ দেখি দিত কে তোরে।
তাই ভাবি মনে কী ধন আমার
দিয়ে যাব তোরে নুকিয়ে,
খুশি রবি তুই খুশি হব আমি
বাস্ সব যাবে চুকিয়ে ॥
কিছু দিয়ে থুয়ে চির দিন তরে
কিনে রেখে দেব মন তোর
এমন আমার মন্ত্রণা নেই,
জানিনেও হেন মস্তর |
নবীন জীবন বনুদূর পথ
পড়ে আছে তোর সুমুখে ;
স্সেহরস মোরা যেটুকু যা! দিই
পিয়ে নিস এক চুমুকে ॥
সাথীদলে জুটে চলে যাস ছুটে,
নব আশে নব পিয়াসে,
যদি ভুলে যাস সময় না পাস,
কী যায় তাহাতে কী আসে
মনে রাখিবার চির অবকাশ
থাকে আমাদেরি বয়সে,
বাহিরেতে যার না পাই নাগাল
অন্তরে জেগে রয় সে।
পাষাণের বাঁধা ঠেলেঠুলে নদী
আপনার মনে সিধে সে
কলগান গেয়ে ছুই তীর বেয়ে
যায় চলে দেশ বিদেশে
যার কোল হতে ঝরনার জআোতে
এসেছে আদরে গলিয়া,
তারে ছেড়ে দূরে যায় দিনে দিনে
অজানা সাগরে চলিয়া ।
অচল শিখর ছোটো নদীটারে
চিরদিন রাখে স্মরণে,
যতদূর যায় স্সেহধারা তার
সাথে যায় দ্রুত চরণে ।
তেমনি তুমিও থাকো নাই থাকো
মনে কোরো মনে কোরো না,
পিছে পিছে তব চলিবে ঝরিয়া
আমার আশিস ঝরনা ॥
