রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট কবিতা

২১। বিদায়

-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

তবে আমি যাই গো তবে যাই ।
ভোরের বেলা শূন্য কোলে
ডাকবি যখন খোক। বলে,
বলব আমি–নাই সে খোকা নাই ।
মাগো, যাই ।

হাওয়ার সঙ্গে হাওয়া হয়ে
যাব মা, তোর বুকে বয়ে
ধরতে আমায় পারবিনে তো হাতে ।
জলের মধ্যে হব মা, ঢেউ
জানতে আমায় পারবে না কেউ,
সনের বেল। খেলব তোমার সাথে ।

বাদল যখন পড়বে ঝরে
রাতে শুয়ে ভাববি মোরে,
ঝরঝরানি গান গাব এ বনে।
জানল দিয়ে মেঘের থেকে
চমক মেরে যাব দেখে,
আমার হাসি পড়বে কি তোর মনে ।

খোকার লাগি তৃমি মা গো,
অনেক রাতে যদি জাগো
তারা হয়ে বলব তোমায় “ঘুমো”
তুই ঘুমিয়ে পড়লে পরে
জ্যোতৎসা হয়ে কব ঘরে,
চোখে তোমার খেয়ে যাব চুমো ।

স্বপন হয়ে আখির ফাকে,
দেখতে আমি আসব মাকে,
যাৰ তোমার ্বুমের মধ্যিখানে,
জেগে তুমি মিথ্যে আশে
হাত বুলিয়ে দেখবে পাশে,
মিলিয়ে যাব কোথায় কে তা জানে ॥

পুজার সময় যত ছেলে
আডিনায় বেডাবে খেলে,

বলবে-_-খোকা নেই-যে ঘরের মাঝে ।
আমি তখন বাশির স্থুরে
আকাশ বেয়ে ঘুরে ্বুরে

তোমার সাথে ফিরব সকল কাজে ।

পুজোর কাপড় হাতে করে
মাসি যদি শুধায় তোরে,
“খোকা তোমার কোথায় গেল চলে ।”
বলিস, খোকা সেকি হারায়,
আছে আমার চোখের তারায়
মিলিয়ে আছে আমার বুকে কোলে ।


Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *