৫৭। পুরোনো-বট

লুটিয়ে পড়ে জটিল জটা
ঘন পাতার গহন ঘটা,
হেথা হোথায় রবির ছটা,
পুকুর ধারে বট।
দশ দিকেতে ছড়িয়ে শাখা।
কঠিন বাহু আকা বাকা,
স্তব্ধ যেন আছে আক
শিরে আকাশ-পট |

নেবে নেবে গেছে জলে
শিকড়গুলো দলে দলে,
সাপের মতো রসাতালে
আলয় খুঁজে মরে।
শতিক শাখা-বাহু তুলি”
বায়ুর সাথে কোলাকুলি
আনন্দেতে দোলাছুলি
গভীর প্রেম-ভরে ।
ঝড়ের তালে নড়ে মাথা,
কাপে লক্ষকোটি পাতা,
আপন মনে গায় সে গাথা,
ছুলায় মহাকায়া,
ভতডিত পাশে উঠে হেসে,
ঝড়ের মেঘ ঝটিৎ এসে,
দাভিয়ে থাকে এলোকেশে,,
তলে গভীর ছায়া ।

নিশি-দিশি দাড়িয়ে আছ
মাথায় লয়ে জট,

ছোটে? ছেলেটি মনে কি পড়ে.
ওগে! প্রাচীন বট।

কতই পাখি তোমার শাখে,
বসে-যে চলে গেছে,
ছোটো ছেলেরে তাদেরি মতো
ভালে কি যেতে আছে ।
তোমার মাঝে হৃদয় তারি
বেঁধেছিল-ষে নীড়।
ডালেপালায় সাধগুলি তার
কত করেছে ভিড ।
মনে কি নেই সারাটা দিন
বসিত বাতায়নে,
তোমার পানে রইত চেয়ে
অবাক ছু-নয়নে ?
তোমার তলে মধুর ছায়!
তোমার তলে ছুটি,
তোমার তলে নাচত বসে
শালিখ পাখি ছুটি ॥

ভীঁডা ঘাটে নাইত কার
তুলত কারা জল,

পুকুরেতে ছায়া তোমার
করত টলমল ।

জলের উপর রোদ পড়েছে
সোনা-মাখা মায়।,
ভেসে বেড়া ছুটি হীস
ছটি হাসের ছায়া ।
ছেোটে। ছেলে রইত চেয়ে
বাসনা অগাধ,
মনের মধ্যে খেলাত তার
কত খেলার সাধ ।
বায়ুর মতে। খেলত যদি
তোমার চারিভিতে,
ছায়ার মতো শুত যদি
তোমার ছায়াটিতে,
পাখির মতো। উড়ে যেত
উড়ে আসত ফিরে,
হাসের মতো ভেসে যেত
তোমার তীরে তীরে ॥

মনে হোত তোমার ছায়ে
কতই-যে কী আছে,

কাদের যেন খ্ুম পাড়াতে
স্ুদ্ঘ ডাকত গাছে।

মনে হোত তোমার মাঝে
কাদির যেন ঘর |

আমি যদি তাদের হতেম।
কেন হলেম পর ।
ছায়ার মতে। ছায়ায় তারা
থারে পাতার পরে,
গুনগুনিয়ে সবাই মিলে
কতই-বে গান করে; ।
দূরে লাগে মূলতানে তান ,
পড়ে আসে বেলা
বাটে বসে দেখে জলে?
আলো ছায়ার খেলা
সন্ধ্যে হোলে খোপা না
তাদের মেয়েগুলি,
কলর সব দোলায় বসে
খেলায় ছুলি ‘ছুজি 1.

রাতে দখিন ৰাতে

নিকুন চাঁরিভিত,

দে আলোয় শুভ্র তনু
ঝিমি বিমি, গীত ।

ওখানেতে পাঠশালা ছুনই,
পণ্ডিত মশাই-

বেত হাতে নাইকে। বসে
মাধব গৌঁসাই ।
সারাট। দিন ছুটি কেবল,
সারাটা দিন খেলা,
পুকুর-ধারে আধার-কর!
বটগাছের তলা ।
আজকে কেন নাইকো তারা ॥
আছে আর সকলে,
তার তাঁদের বাসা ভেঙে
কোথায় গেছে চলে ।
ছায়ার মধ্যে মায়া ছিল
ভেডে দিল কে।
ছায়া! কেবল রেল পড়ে,
কোথায় গেল সে।
ডালে বসে পাখির! আজ
কোন্‌ প্রাণেতে ডাকে ॥
রবির আলো কাদের খোজে
পাতার ফাঁকে ফাকে ।
গল্প কত ছিল যেন
তোমার খোপেখাপেছ,
পাখির সঙ্গে মিলে-মিশে
ছিল চুপে-চাপে,

ছুপুর বেল নূপুর তাদের
বাজত অনুক্ষণ,
ছোটে ছুটি ভাই ভগিনীর
আকুল হোত মন।
ছেলেবেলায় ছিল তারা,
কোথায় গেল শেষে ।
গেছে বুঝি ঘুমপাড়ানি
মাসিপিসির দেশে ॥


Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *