৫২। শীতের বিদায়
বস্তু বালক মুখ-ভরা হাসিটি
বাতাস বয়ে গুড়ে চুল;
শীত চলে যায়, মারে তার গায়
মোটা মোটা গোটা ফুল ।
আচল ভ’রে গেছে শত ফলের মেলা,
গোলাপ ছু’ড়ে মারে টগর চাপা বেলা,
শীত বলে, “ভাই, এ কেমন খেলা,
যাবার বেল! হোলো আসি ।”
বসস্ত হাসিয়ে বসন ধ’রে টানে,
পাগল ক’রে দেয় কুছ কুহু গানে,
ফ,লের গন্ধ নিয়ে প্রাণের পরে হানে,
হাসির ‘প্রে হানে হাসি ॥
ওড়ে ফলের রেণু, ফলের পরিমল,
ফলের পাঁপড়ি উড়ে করে-যে বিকল,
কুস্ুমিত শাখা, বনপথ ঢাকা,
কলের ‘পরে পড়ে ফল ।
দক্ষিণে বাতাসে ওডে শীতের বেশ,
উড়ে উডে” পড়ে শীতের শুভ্র কেশ,
কোন্ পথে যাবে না পায় উদ্দেশ,
হয়েযায় দিক ভুল ॥
বসন্ত বালক হেসেই কুটি-কুটি,
টল্মল্ করে রাড! চরণ ছুটি,
গান গেয়ে পিছে ধায় ছুটি ছুটি,
বনে লুটোপুটি যায় ।
নদী তালি দেয় শত হাত তুলি,
বলাবলি করে ডালপালাগুলি,
লতায় লতায় হেসে কোলাকুলি
অঙ্গুলি তুলি চায় ॥
রঙ্গ দেখে হাসে মল্লিক মালতী,
আশে পাশে হাসে কত জাতি যৃথী,
মুখে বসন দিয়ে হাসে লজ্জাবতী
বনফ,ল-বধূগুলি।
কত পাখি ডাকে কত পাখি গায়,
‘কিচি-মিচি-কিচি কত উড়ে যায়,
এ-পাশে ও পাশে মাথাটি হেলায়,
নাচে পুচ্ছখানি তুলি ॥
শীত চলে যায়, ফিরে ফিরে চায়,
মনে মনে ভাবে এ কেমন বিদায়;
হাঁসির জ্বালায় কাদিয়ে পালায়,
ফ,ল ঘায় হার মানে ।
শুকনে। পাতা তার সঙ্গে উড়ে যায়,
উত্তরে বাতাস করে হায় হায়,
আপাদমস্তক ঢেকে কুয়াশায়
শীত গেল কোনখানে ॥

 
			 
			 
			 
			 
			