৪৯। কাগজের নৌকা
ছুটি হোলে রোজ ভাসাই জলে
কাগজ-নৌকাখানি ।
লিখে রাখি তাতে আপনার নাম,
লিখি আমাদের বাড়ি কোন্ গ্রাম,
বড়ে। বড়ো ক’রে মোটা অক্ষরে,
যতনে লাইন টানি ।
যদি সে-নৌক। আর কোনো দেশে
আর কারে হাতে পড়ে গিয়ে শেষে
আমার লিখন পড়িয়া তখন
বুঝিবে সে অন্ুমানি”,
কার কাছ হতে ভেসে এল স্রোতে
কাগজ-নীকাখানি |
আমার নৌকা সাজাই যতনে
শিউলি বকুল ভরি” |
বাড়ির বাগান গাছের তলায়
ছেয়ে থাকে ফুল সকাল বেলায়,
শিশিরের জল করে ঝলমল
প্রভাতের আলো পড়ি ।
সেই কুন্ুমের অতি ছোটো বোৰা।
কোন্ দিকৃ পানে চলে যায় সোজা,
বেল শেষে যদি পার হয়ে নদী
ঠেকে কোনোখানে ষেয়ে__
প্রভাতের ফুল সাঝে পাবে কুল
কাগজের তরী বেযে।
আমার নৌকা ভাসাইয়! জলে
চেয়ে থাকি বসি তীরে।
ছোটে ছেটে! ঢেউ ওঠে আর পড়ে,
রবির কিরণে ঝিকিমিকি করে,
আকাশেতে পাখি চলে যায় ডাকি:
বায়ু বহে ধীরে ধীরে ।
গগনের তলে মেঘ ভাসে কত
আমারি সে ছোটে! নৌকার মতো,
কে ভাসালে তায়, কোথা ভেসে যায়,
কোন্ দেশে গিয়ে লাগে;
এ মেঘ আর তরণী আমার
কে যাবে কাহার আগে।
‘বেল। হোলে শেষ বাড়ি থেকে এসে
নিয়ে যায় মোরে টানি? ;
আমি ঘরে ফিরি, থাকি কোণে মিশি,
যেথা কাটে দিন সেথা কাটে নিশি,
কোথা কোন্ গায় ভেসে চলে যায়;
আমার নৌকাখানি ।
কোন্ পথে যাবে কিছু নাই জানা,
কেহ তারে কভু নাহি করে মানা,
ধ’রে নাহি রাখে ফিরে নাহি ডাকে,
ধায় নব নব দেশে ।
কাগজের তরী, তারি পরে চড়ি
মন যায় ভেসে ভেসে ॥
রাত হয়ে আসে, শুই বিছানায়,
মুখ ঢাকি ছই হাতে;
চোখ বুজে ভাবি,এমন আধার,
কালী দিয়ে ঢাল। নদীর ছু-ধার,
তারি মাঝখানে কোথায় কে জানে
নৌকা চলেছে রাতে ।
আকাশের তারা মিটি মিটি করে,
শিয়াল ডাকিছে প্রহরে প্রহরে, .
তরীখানি বুঝি ঘর খুজি” খজি’
তীরে তীরে ফিরে ভাসি? ।
ঘুম লয়ে সাথে চড়েছে তাহাতে
ঘুম-পাড়ানিয়া মাসি ॥

 
			 
			 
			 
			 
			