৪। ঘুমচোরা
কে নিল খোকার ঘুম হরিয়া।
মা তখন জল নিতে ও পাড়ার দীঘিটিতে
গিয়াছিল ঘট কাখে করিয়া ।–
তখন রোদের বেল! সবাই ছেড়েছে খেল’,
৪পারে নীরব চখা-চখীরা,
শালিক থেমেভে ঝোপে শুধু পায়রার খোপে
বকাবকি করে সখা-সখিরা |
তখন রাখাল ছেলে পাঢুনি ধুলায় ফেলে
ঘুমিয়ে পড়েছে বটতলাতে ;
বাশ-বাগানের ছায়ে এক-মনে এক পায়ে
খাড়া হয়ে আছে বক জলাতে।
সেই ফাকে ঘ্ুমচোর ঘরেতে পশিয়া মোর
ঘুম নিয়ে উড়ে গেল গগনে,
মা এসে অবাক রয়, দেখে খোকা ঘরময়
হামাগুড়ি দিয়ে ফিরে সঘনে।
আমার খোকার ঘুম নিল কে।
যেথা পাই সেই চোরে বাধিয়। আনিব ধ’রে
সে-লোক লুকাবে কোথা ত্রিলোকে।
যাব সে-গুহার ছায়ে কালে পাথরের গায়ে
কুলু কুলু বহে যেথা ঝরনা ।
যাব সে বকুল বনে নিরিবিলি যে-বিজনে
ঘুঘুরা করিছে ঘর-করনা ।
যেখানে সে-বুড়ো বট নামায়ে দিয়েছে জট,
বিল্লী ডাকিছে দিনে ছুপুরে,
যেখানে বনের কাছে বন-দেবতার। নাচে
টাদনিতে রুনুঝুনু নৃপুরে,
যাব আমি ভরা সাঝে সেই বেণুবন-মাঝে
আলো! যেথ1! রোজ জ্বালে জোনাকি,
শুধাব মিনতি ক’রে আমাদের ঘুম-চোরে
তোমাদের আছে জানাশোনা কি।
কে নিল খোকার ঘুম চুরায়ে।
কোনোমতে দেখা তার পাই যদি একবার
লই তবে সাধ মোর পুরায়ে ।
দেখি তারাস্থীস! খুঁজি? কোথা ঘুম করে পুজি,
এ চোরা-ধন রাখে কোন্ আড়ালে ।
নব তার, ভাবিতে হবে না আর
খোকার চোখের ঘ্বুম হারালে ।
ডান! ছুটি বেঁধে তা”রে নিয়ে যাব নদী-পাঁরে
সেখানে সে বসে এক কোণেতে
জলে শর-কাঠি ফেলে মিছে মাছ-ধর! খেলে,
দিন কাটাইবে কাশ-বনেতে ।
যখন সাঝের বেল। ভাঙিবে হাটের মেল!
ছেলের! মায়ের কোল ভরিবে,
সারারাত টিটি-পাখি টিটকারি দিবে ডাকি–
“ঘুম-চোরা কার ঘুম হরিবে ।”

 
			 
			 
			 
			