পরিচয় কবিতা

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের জন্য নানান ধরণের কবিতা রচনা করেছেন। তিনি পরিচয় নামের মোট চারটি কবিতা লিখেছেন। এখানে পরিচয় কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখিত আমার একত্রিত করেছি।

তাঁর এই চারটি পরিচয় কবিতা আমাদের কাছে চারটি ভিন্ন ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পায়। যদিও তার সকল কবিতায় আমাদের সকলের প্রিয়, এখানে তার চারটি পরিচয় কবিতা এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।

পরিচয় কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মোট ৪ টি:

পরিচয়

-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

একদিন তরীখানা থেমেছিল এই ঘাটে লেগে
বসন্তের নূতন হাওয়ার বেগে ।
তোমরা শুধায়েছিলে মোরে ডাকি ,
” পরিচয় কোনো আছে নাকি,
যাবে কোনখানে ? “
আমি শুধু বলেছি, ” কে জানে !”

নদীতে লাগিল দোলা ,বাঁধনে পড়িল টান—-
একা বসে গাহিলাম যৌবনের বেদনার গান।
সেই গান শুনি
কুসুমিত তরুতলে তরূন তরূণী
তুলিল অশোক—
মোর হাতে দিয়ে তারা কহিল ,” এ আমাদেরই লোক “।
আর কিছু নয়,
সে মোর প্রথম পরিচয় ।।

তার পরে জোয়ারের বেলা সাঙ্গ হল.
সাঙ্গ হল তরঙ্গের খেলা ;
কোকিলের ক্লান্ত গানে বিস্মৃত দিনের কথা অকস্মাৎ যেন মনে আনে ;
কনকচাঁপার দল পড়ে ঝুরে;
ভেসে যায় দূরে,
ফাল্গুনের উৎসবরাতির নিমন্ত্রণলিখনপাঁতির
ছিন্ন অংশ তারা অর্থহারা ।

ভাঁটার গভীর টানে
তরীখানা ভেসে যায় সমুদ্রের পানে ।
নুতন কালের নব যাত্রী ছেলেমেয়ে
শুধাইছে দূর হতে চেয়ে,
‘ সন্ধ্যার তারার দিকে
বহিয়া চলেছে তরণী কে ?”
সেতারেতে বাঁধিলাম তার,
গাহিলাম আরবার,
‘ মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক,
আমি তোমাদেরই লোক,
আর কিছু নয়—–
এই হোক শেষ পরিচয় ।।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *